বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আপনারা তো জানেনই, শেখার প্রতি আমার ভালোবাসা কত গভীর এবং আমি সবসময় নতুন কিছু শিখতে ও নিজেকে আরও উন্নত করতে চেষ্টা করি। এই আধুনিক যুগে যেখানে প্রতিনিয়ত সব কিছু বদলে যাচ্ছে, সেখানে নিজের শেখার পথ নিজেই তৈরি করে নেওয়াটা কতটা জরুরি, সেটা আমরা সবাই এখন বুঝতে পারছি, তাই না?
এই ভাবনা থেকেই, নিজের শেখার প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করতে এবং অন্যদেরও শেখার পথে সাহায্য করার জন্য আমি ‘자기-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক’ (Self-Directed Learning Coach) সার্টিফিকেশনটা অর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। বিশ্বাস করুন, এই যাত্রাটা ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা!
অনেক কিছু শিখেছি, নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি। এই সার্টিফিকেশন শুধু একটা কাগজ নয়, এটা আমাকে অন্যদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার একটা সুযোগ করে দিয়েছে। আমার মনে হয়, আপনারা যারা নিজেদের বা তাদের সন্তানদের শেখার পদ্ধতি নিয়ে চিন্তিত, তাদের জন্য আমার এই অভিজ্ঞতাটা দারুণ কাজে লাগবে। তাহলে আর দেরি কেন?
আসুন, আমার এই সফলতার গল্পটা এবং এর পেছনের খুঁটিনাটি সবকিছু বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক!
আমার শেখার নতুন দিগন্ত: কীভাবে শুরু হলো এই যাত্রা?

বন্ধুরা, আপনারা তো জানেনই, আমি সব সময় নতুন কিছু শিখতে ভীষণ ভালোবাসি। আর এই শেখার প্রতি আমার আগ্রহই আমাকে ‘স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক’ (Self-Directed Learning Coach) সার্টিফিকেশন নেওয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছে। সত্যি বলতে, প্রথমদিকে যখন এই কোর্সটার কথা শুনলাম, তখন একটু দ্বিধায় ছিলাম – পারব তো?
কিন্তু শেখার অদম্য ইচ্ছাই আমাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। আসলে, আজকের এই দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে, সব তথ্য হাতের কাছে থাকলেও, কোনটা গুরুত্বপূর্ণ আর কোনটা অপ্রয়োজনীয়, সেটা বোঝা বেশ কঠিন। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, কীভাবে নিজে নিজে শিখে, সেই জ্ঞানকে কাজে লাগানো যায়, সেটাই এখন আসল চ্যালেঞ্জ। আমার মনে হয়েছিল, যদি আমি এই প্রক্রিয়াটা ভালোভাবে বুঝতে পারি, তাহলে শুধু নিজের নয়, আরও অনেকের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারব। এই ভাবনাটাই আমাকে এই অসাধারণ যাত্রায় পা বাড়াতে অনুপ্রাণিত করেছিল। এই কোর্সে ভর্তি হওয়ার আগে, আমার মনে অনেক প্রশ্ন ছিল। যেমন, এটা কি শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞান দেবে, নাকি বাস্তব জীবনেও এর প্রয়োগ আছে?
আমি কি সত্যিই অন্যদের শেখার পথে সঠিক নির্দেশনা দিতে পারব? এই সমস্ত প্রশ্ন নিয়ে আমি যখন কোর্সের প্রথম ক্লাসে ঢুকলাম, তখন মনে হলো, যেন এক নতুন পৃথিবী আমার জন্য অপেক্ষা করছে। শিক্ষকরা এতটাই বন্ধুত্বপূর্ণ আর ক্লাসের পরিবেশ এতটাই প্রাণবন্ত ছিল যে, মুহূর্তেই আমার সব দ্বিধা কেটে গেল। আমি সত্যিই অনেক আনন্দিত যে আমি এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম।
কেন স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা?
আমার মনে হয়, ‘স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা’র গুরুত্ব এখনকার যুগে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। কারণ, আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রযুক্তির কারণে তথ্য প্রবাহ এতটাই বেশি যে, প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখতে না পারলে পিছিয়ে পড়তে হয়। স্কুলের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের গতানুগতিক শিক্ষা পদ্ধতি হয়তো আমাদের একটা ভিত তৈরি করে দেয়, কিন্তু এরপরের পথটা অনেকটাই নিজের। কীভাবে নতুন দক্ষতা অর্জন করব, কীভাবে পুরনো জ্ঞানকে আপডেট রাখব, আর কীভাবে নিজেদের আগ্রহ অনুযায়ী শিখব— এই সব কিছুর উত্তর লুকিয়ে আছে স্ব-নির্দেশিত শিক্ষার মধ্যে। আমি দেখেছি, যারা নিজেদের শেখার প্রক্রিয়া নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তারা জীবনে অনেক বেশি সফল হয়। তারা শুধু অন্যের উপর নির্ভরশীল থাকে না, বরং নিজেরাই নিজেদের লক্ষ্য স্থির করে এবং তা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পথ খুঁজে নেয়। এই পদ্ধতিটা আমাকে এতটাই মুগ্ধ করেছে যে, আমি ঠিক করে ফেললাম, আমি এর গভীরে যাবো এবং এর প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় বোঝার চেষ্টা করব। এটা শুধু বই পড়ে শেখা নয়, এটা জীবনকে নতুন করে শেখার একটা কৌশল।
প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ এবং প্রত্যাশা
যে কোনো নতুন কিছু শুরু করার আগে কিছু চ্যালেঞ্জ তো থাকেই, তাই না? আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। প্রথমত, সময় ব্যবস্থাপনা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। পরিবার, কাজ এবং অন্যান্য দায়িত্ব সামলে পড়াশোনার জন্য আলাদা করে সময় বের করাটা বেশ কঠিন ছিল। দিনের শেষে যখন ক্লান্ত হয়ে ফিরতাম, তখন মনে হতো, আজ আর সম্ভব নয়। কিন্তু নিজের প্রতিজ্ঞা আমাকে ধরে রেখেছিল। দ্বিতীয়ত, নতুন একটা শিক্ষা পদ্ধতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়াটাও কিছুটা কঠিন ছিল। যেখানে আমরা সাধারণত শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী চলি, সেখানে নিজে থেকে সব কিছু পরিকল্পনা করা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়াটা প্রথমে একটু অপরিচিত লাগছিল। আমার প্রধান প্রত্যাশা ছিল, আমি যেন শুধু সার্টিফিকেটটা না পাই, বরং সত্যিকারের একজন কার্যকরী কোচ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পারি। আমি চেয়েছিলাম, এই কোর্স থেকে শেখা জ্ঞান যেন শুধু আমার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং আমি যেন তা অন্যদের সাথেও ভাগ করে নিতে পারি এবং তাদের জীবনেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি। এই প্রত্যাশাগুলোই আমাকে প্রতিটা মুহূর্তে শক্তি জুগিয়েছিল।
সার্টিফিকেশন কোর্সের অন্দরমহল: যা শিখলাম, যা পেলাম
‘স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক’ সার্টিফিকেশন কোর্সটা আমার জীবনের এক নতুন অধ্যায় খুলে দিয়েছে। এই কোর্সটা শুধু কিছু তাত্ত্বিক জ্ঞান শেখায়নি, বরং আমার চিন্তাভাবনার পদ্ধতিটাকেই সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। ক্লাসরুমের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল যেন এক নতুন আবিষ্কারের পালা। শিক্ষকরা ছিলেন অসাধারণ, তাদের পড়ানোর ধরণ ছিল এতটাই আকর্ষণীয় যে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্লাস করলেও ক্লান্তি আসত না। তারা শুধু বিষয়বস্তু শেখাননি, বরং সেগুলোকে বাস্তব জীবনের বিভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে আমাদের সামনে তুলে ধরেছিলেন। আমরা দলবদ্ধভাবে কাজ করেছি, বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করেছি এবং একে অপরের অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছি। এই কোর্সটা আমাকে শিখিয়েছে যে, শেখাটা শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া, যা জীবনের প্রতিটি ধাপে আমাদের সাহায্য করে। সত্যি বলতে, আমি কোর্স শুরু করার আগে ভাবিনি যে এত গভীর কিছু শিখতে পারব। প্রতিটি মডিউলে নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছিল, আর আমি মুগ্ধ হয়ে সেই জ্ঞান আহরণ করছিলাম।
পাঠ্যক্রমের গভীরতা ও ব্যবহারিক প্রয়োগ
এই কোর্সের পাঠ্যক্রমটা এতটাই সুচিন্তিতভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে, আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। এখানে স্ব-নির্দেশিত শিক্ষার মূলনীতি থেকে শুরু করে, শেখার কৌশল, অনুপ্রেরণা, লক্ষ্য নির্ধারণ, সময় ব্যবস্থাপনা, এবং এমনকি প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার পর্যন্ত সবকিছু বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছিল। সবচেয়ে ভালো লেগেছে ব্যবহারিক অংশগুলো। আমরা বিভিন্ন কেস স্টাডি নিয়ে কাজ করেছি, নিজেদের এবং অন্যদের শেখার ধরণ বিশ্লেষণ করেছি এবং কার্যকর কোচিং প্ল্যান তৈরি করেছি। আমি নিজে যখন একটি ছোট প্রজেক্টে এই শেখা কৌশলগুলো প্রয়োগ করলাম, তখন এর কার্যকারিতা দেখে অবাক হয়ে গেলাম। যেমন, আমি আমার এক ছোট ভাইকে, যে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছিল না, তাকে এই স্ব-নির্দেশিত শেখার কিছু কৌশল শেখালাম। কিছুদিন পর তার মধ্যে যে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখলাম, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। সে এখন নিজেই নিজের পড়ার রুটিন তৈরি করে, লক্ষ্য স্থির করে এবং সেগুলো অর্জন করার জন্য চেষ্টা করে। এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে যে, তাত্ত্বিক জ্ঞান তখনই কার্যকর হয়, যখন আমরা সেগুলোকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারি।
সহযোগিতামূলক পরিবেশ এবং নতুন বন্ধু
এই কোর্সের একটা অন্যতম সেরা দিক ছিল এর সহযোগিতামূলক পরিবেশ। ক্লাসের সবাই এতটাই বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল যে, মনেই হয়নি আমরা একটা প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে আছি। আমরা একে অপরের অভিজ্ঞতা, সাফল্য এবং ব্যর্থতা ভাগ করে নিয়েছি। যখন কোনো বিষয়ে বুঝতে অসুবিধা হতো, তখন সহপাঠীরাই এগিয়ে এসে সাহায্য করত। এই কোর্সটা করার সময় আমি বেশ কিছু নতুন বন্ধুর সন্ধান পেয়েছি, যাদের সাথে আমার চিন্তাভাবনার মিল আছে। আমরা এখনও নিজেদের মধ্যে শেখার নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা করি, একে অপরের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করি। এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলো আমাকে ব্যক্তিগতভাবেও অনেক সমৃদ্ধ করেছে। আমরা শুধু কোর্স মেটেরিয়াল নিয়েই আলোচনা করতাম না, বরং জীবনের অন্যান্য দিক নিয়েও কথা বলতাম, নিজেদের স্বপ্ন আর লক্ষ্য ভাগ করে নিতাম। এই মানবিক সংযোগগুলো আমার শেখার অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দদায়ক করে তুলেছে।
ব্যক্তিগত জীবনে পরিবর্তন: আমি একজন ভালো শেখার পরামর্শদাতা
‘স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক’ হওয়ার এই যাত্রাটা আমার ব্যক্তিগত জীবনকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এই কোর্স করার আগে, আমি হয়তো নিজের শেখার ধরণ সম্পর্কে ততটা সচেতন ছিলাম না। কিন্তু এখন আমি জানি, আমি কীভাবে সবচেয়ে ভালো শিখি, কোন পরিবেশে শিখলে আমার মনোযোগ বাড়ে, এবং কোন কৌশলগুলো আমার জন্য সবচেয়ে কার্যকর। এই জ্ঞানটা শুধু পড়াশোনার ক্ষেত্রেই নয়, জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আমি এখন যেকোনো নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে পারি এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে পারি। আগে হয়তো কোনো নতুন কাজ শুরু করার আগে একটু ভয় পেতাম, কিন্তু এখন সেই ভয়টা অনেকটাই কমে গেছে। কারণ আমি জানি, আমি নিজে থেকেই প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে নিতে পারব এবং সেগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে কাজে লাগাতে পারব। আমার মনে হয়, এটি আমার আত্মবিশ্বাসকেও অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।
নিজের শেখার ধরণ বোঝা
এই কোর্সের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি ছিল নিজের শেখার ধরণ (learning style) বোঝা। আমি আগে কখনো এতটা গভীরভাবে ভাবিনি যে, আমি আসলে কীভাবে শিখতে ভালোবাসি। এই কোর্সে আমরা ভিজ্যুয়াল, অডিটরি, রিডিং/রাইটিং এবং কাইনেস্থেটিক – এই চারটি প্রধান লার্নিং স্টাইল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। আমি যখন নিজেকে বিশ্লেষণ করলাম, তখন বুঝতে পারলাম যে আমি মূলত ভিজ্যুয়াল এবং কাইনেস্থেটিক লার্নার। অর্থাৎ, আমি দেখে এবং হাতে-কলমে কাজ করে সবচেয়ে ভালো শিখি। এই আবিষ্কারটা আমার জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল। এখন আমি যখন কোনো নতুন কিছু শিখি, তখন সেগুলোকে ভিজ্যুয়াল আকারে উপস্থাপনের চেষ্টা করি, যেমন – ফ্লোচার্ট, মাইন্ড ম্যাপ তৈরি করি, অথবা হাতে-কলমে অনুশীলন করি। এতে আমার শেখাটা অনেক সহজ হয়ে গেছে এবং আমি আরও কার্যকরভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারছি। আমার মনে হয়, প্রত্যেকেরই নিজের শেখার ধরণটা বোঝা উচিত, কারণ এটা শেখার প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ করে দেয়।
পরিবার ও বন্ধুদের সাথে নতুন সম্পর্ক
এই কোর্সের মাধ্যমে আমি শুধু নিজের শেখার পদ্ধতি উন্নত করিনি, বরং আমার পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে আমার সম্পর্কও অনেক বদলে গেছে। এখন আমি তাদের শেখার ধরণ এবং চ্যালেঞ্জগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারি। আমার ছোট ভাইবোনদের যখন পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়, তখন আমি তাদেরকে সরাসরি উত্তর না দিয়ে, কীভাবে তারা নিজেরাই উত্তর খুঁজে বের করতে পারবে, সেই পথটা দেখিয়ে দেই। এতে তাদের মধ্যে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে এবং তারা নিজেদের সমস্যা সমাধানের জন্য আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছে। আমার মনে আছে, আমার এক বন্ধু চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কিন্তু তার মনে অনেক ভয় ছিল। আমি তাকে শেখার কিছু কৌশল এবং লক্ষ্য নির্ধারণের পদ্ধতি শেখালাম। মাসখানেক পর সে আমাকে জানাল যে, সে এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং তার প্রস্তুতিও অনেক ভালো হচ্ছে। এই ধরনের ছোট ছোট ঘটনাগুলো আমাকে সত্যিই অনেক আনন্দ দেয় এবং আমার মনে হয়, এটাই এই সার্টিফিকেশন অর্জনের সবচেয়ে বড় সার্থকতা।
অন্যদের অনুপ্রাণিত করা: আমার কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা
‘স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক’ হিসেবে আমার যাত্রাটা শুধু নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং অন্যদের জীবনেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে আমাকে সাহায্য করেছে। আমি যখন প্রথম কোচিং শুরু করলাম, তখন একটু নার্ভাস ছিলাম, কারণ আমি জানতাম না যে আমি কতটা সফল হতে পারব। কিন্তু যখন একজন শিক্ষার্থীকে তার লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করতে পারলাম, তখন আমার আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বেড়ে গেল। আমি দেখেছি, অনেক মানুষই জানে না যে তারা কী শিখতে চায় বা কীভাবে শিখতে চায়। তাদের সেই পথটা দেখিয়ে দেওয়া, তাদের মধ্যে শেখার আগ্রহ তৈরি করা – এই কাজটা সত্যিই ভীষণ আনন্দের। আমি যখন দেখি যে আমার পরামর্শে কেউ তার জীবনে উন্নতি করছে, তখন আমার মনটা আনন্দে ভরে ওঠে। এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে যে, জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অসাধারণ তৃপ্তি আছে।
ছোট ছোট সাফল্য: আত্মবিশ্বাসের সিঁড়ি
আমার কোচিংয়ের সবচেয়ে ভালো লাগার মুহূর্তগুলো আসে যখন আমি ছোট ছোট সাফল্য দেখতে পাই। যেমন, একজন শিক্ষার্থী হয়তো প্রথমদিকে কোনো একটি বিষয়ে ভীষণ দুর্বল ছিল, কিন্তু আমার দেখানো পথে চলে সে যখন সেই বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠে, তখন আমার আনন্দের সীমা থাকে না। আমার মনে আছে, একটি বাচ্চা, যে গণিতে খুব কাঁচা ছিল, তাকে আমি শেখালাম কীভাবে গেমের মাধ্যমে গণিতের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হয়। কয়েক সপ্তাহ পর তার মা আমাকে ফোন করে জানালেন যে, তার বাচ্চা এখন নিজেই গণিতের সমস্যা সমাধান করার জন্য আগ্রহী। এই ধরনের ছোট ছোট সাফল্যগুলো আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি ছোট সাফল্যই পরবর্তী বড় সাফল্যের সিঁড়ি। যখন একজন ব্যক্তি তার নিজের ছোট ছোট লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে পারে, তখন তার মধ্যে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়, যা তাকে আরও বড় কিছু করার জন্য শক্তি যোগায়।
বাস্তব জীবনের কিছু কেস স্টাডি
| শিক্ষার্থীর ধরন | চ্যালেঞ্জ | আমার দেখানো পথ | ফলস্বরূপ |
|---|---|---|---|
| কলেজের শিক্ষার্থী | পড়াশোনায় মনোযোগের অভাব, লক্ষ্যহীনতা | লক্ষ্য নির্ধারণ, সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল, ভিজ্যুয়াল স্টাডি মেথড | পরীক্ষায় ভালো ফলাফল, উচ্চশিক্ষা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী |
| কর্মজীবী যুবক | নতুন দক্ষতা অর্জনে অনীহা, প্রযুক্তির ভীতি | অনলাইন রিসোর্স ব্যবহারের কৌশল, প্রজেক্ট-ভিত্তিক শেখা, ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ | নতুন সফটওয়্যার শিখতে সক্ষম, কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি |
| গৃহিণী | নতুন ভাষা শেখার আগ্রহ, কিন্তু সময়ের অভাব | দৈনিক ছোট ছোট সময় বের করা, অডিও-ভিত্তিক লার্নিং, প্র্যাকটিস পার্টনার | মৌলিক কথোপকথন করতে সক্ষম, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি |
আমার কোচিং জীবনে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এদের মধ্যে ছিলেন কলেজ পড়ুয়া ছাত্র, কর্মজীবী যুবক, এমনকি কিছু গৃহিণীও। উদাহরণস্বরূপ, একজন কলেজ শিক্ষার্থীর কথা বলি, যে পড়াশোনায় একেবারেই মনোযোগ দিতে পারছিল না। তার সাথে কথা বলে আমি বুঝতে পারলাম যে, তার কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই। আমি তাকে প্রথমে ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে শেখালাম, যেমন – প্রতিদিন ২০ মিনিট গণিত অনুশীলন। এরপর তাকে সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল শেখালাম এবং ভিজ্যুয়াল স্টাডি মেথড ব্যবহার করতে উৎসাহিত করলাম। কয়েক মাস পর সে শুধু পরীক্ষায় ভালো ফলাফলই করল না, বরং উচ্চশিক্ষা নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠল। আরেকটি ঘটনা ছিল একজন কর্মজীবী যুবকের, যিনি নতুন একটি সফটওয়্যার শিখতে ভয় পাচ্ছিলেন। তাকে আমি অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার করতে শেখালাম এবং ছোট ছোট প্রজেক্টের মাধ্যমে শেখার পদ্ধতি দেখালাম। এখন তিনি সেই সফটওয়্যারটি বেশ ভালোভাবেই ব্যবহার করতে পারেন এবং তার কর্মক্ষেত্রেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই কেস স্টাডিগুলো আমাকে আরও বেশি করে মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার প্রেরণা যোগায়।
স্ব-নির্দেশিত শিক্ষার ভবিষ্যৎ: কেন এটা জরুরি?

আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে সবকিছুই খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। আজ যে প্রযুক্তি বা দক্ষতা আমাদের কাছে নতুন মনে হচ্ছে, কাল তা পুরনো হয়ে যেতে পারে। এই দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিবেশে টিকে থাকতে হলে এবং এগিয়ে যেতে হলে, আমাদের নিজেদেরও প্রতিনিয়ত শিখতে হবে এবং নতুন কিছু গ্রহণ করতে হবে। আর এখানেই স্ব-নির্দেশিত শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থা হয়তো আমাদের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সাহায্য করে, কিন্তু এরপরের পথটা অনেকটাই নিজের হাতে। আমি মনে করি, আগামী দিনে যারা নিজেদের শেখার প্রক্রিয়া নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, তারাই কর্মজীবনে এবং ব্যক্তিগত জীবনে অনেক বেশি সফল হবে। এটা শুধু জ্ঞানের বিষয় নয়, এটা মানসিকতারও বিষয়। যখন আমরা নিজে থেকে শিখতে উদ্বুদ্ধ হই, তখন আমাদের মধ্যে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়, যা আমাদের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করে।
বদলে যাওয়া পৃথিবীতে শিক্ষার গুরুত্ব
আমার মনে হয়, এখনকার বিশ্বে শিক্ষার সংজ্ঞাটাই বদলে গেছে। শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করাটাই আর শিক্ষার মূল লক্ষ্য নয়। এখনকার যুগে আসল লক্ষ্য হলো নতুন দক্ষতা অর্জন করা, সমস্যার সমাধান করা এবং নিজেকে যেকোনো পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়া। আমরা জানি, অনেক পেশাই এখন স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাচ্ছে, এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক নতুন পেশা তৈরি হবে, যার জন্য নতুন দক্ষতার প্রয়োজন হবে। এই পরিস্থিতিতে, যদি আমরা শুধু পুরনো জ্ঞান আঁকড়ে ধরে থাকি, তাহলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা আমাদের এই সুযোগটা দেয় যে, আমরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী, নিজেদের আগ্রহ অনুযায়ী নতুন কিছু শিখতে পারি। আমি দেখেছি, যারা এই পথে হাঁটে, তারা সব সময় নিজেদেরকে প্রাসঙ্গিক রাখতে পারে এবং নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে। এটি শুধু কর্মজীবনের জন্য নয়, একটি পরিপূর্ণ জীবন যাপনের জন্যও জরুরি।
দক্ষতা অর্জনে নতুন পথ
স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা আমাদের দক্ষতা অর্জনের নতুন নতুন পথ খুলে দেয়। আগে হয়তো নতুন কিছু শিখতে হলে কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হতো, যেখানে নির্দিষ্ট সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হতো। কিন্তু এখন ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তির কল্যাণে, আমরা ঘরে বসেই বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোর্স করতে পারি, বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে নতুন দক্ষতা শিখতে পারি। ইউটিউবে হাজার হাজার টিউটোরিয়াল আছে, যেখানে যেকোনো বিষয়ে বিস্তারিত শেখা যায়। আমি নিজেও এই অনলাইন রিসোর্সগুলো ব্যবহার করে অনেক নতুন কিছু শিখেছি। যেমন, আমি একটি নতুন গ্রাফিক্স ডিজাইন সফটওয়্যার শিখতে চেয়েছিলাম। তখন আমি কোনো প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে ইউটিউবের টিউটোরিয়াল এবং কিছু অনলাইন কোর্স থেকে নিজে নিজেই শিখলাম। এতে আমার সময় এবং অর্থ দুটোই সাশ্রয় হলো। এই পদ্ধতিটা এতটাই কার্যকর যে, আমি এখন যেকোনো নতুন কিছু শেখার আগে দেখি যে, আমি নিজে থেকেই সেটা শিখতে পারি কিনা।
এই যাত্রায় আমার কিছু ব্যক্তিগত অনুভূতি
‘স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক’ হওয়ার এই পুরো যাত্রাটা ছিল আমার জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এই পথে হাঁটার সময় আমার মনে বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি কাজ করেছে। কখনো মনে হয়েছে, পারব তো?
এত কিছু একসাথে সামলানো কি সম্ভব? আবার কখনো আনন্দে আমার মন ভরে গেছে, যখন কোনো কঠিন বিষয় আয়ত্ত করতে পেরেছি বা কাউকে সাহায্য করতে পেরেছি। এই অনুভূতিগুলোই আমাকে একজন মানুষ হিসেবে আরও সমৃদ্ধ করেছে। আমি মনে করি, জীবনের প্রতিটি নতুন অভিজ্ঞতা আমাদের কিছু না কিছু শিখিয়ে যায়, আর এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য এবং অন্যের প্রতি সহানুভূতি। আমি ভীষণ কৃতজ্ঞ যে আমি এই সুযোগটা পেয়েছি। এই যাত্রায় আমি শুধু একজন প্রশিক্ষক হইনি, বরং একজন ভালো মানুষ হওয়ার পথও খুঁজে পেয়েছি।
ভয়, আনন্দ আর শেখার তৃপ্তি
সত্যি বলতে, এই কোর্স শুরু করার আগে আমার মনে একটু ভয় ছিল। নতুন একটা কিছু শুরু করছি, কেমন হবে, কী শিখব, পারব কিনা – এই সমস্ত প্রশ্ন আমাকে কিছুটা চিন্তিত রেখেছিল। কিন্তু যখন আমি কোর্সের গভীরে প্রবেশ করলাম এবং নতুন নতুন বিষয় শিখতে শুরু করলাম, তখন সেই ভয়টা কেটে গিয়ে এক অন্যরকম আনন্দ অনুভব করলাম। কোনো কঠিন বিষয় বুঝতে পারার পর বা কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারার পর যে তৃপ্তিটা পাওয়া যায়, সেটা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। মনে হতো, যেন আমি নতুন একটা পাজল সমাধান করতে পেরেছি। ক্লাসে যখন সবাই মিলে আলোচনা করতাম এবং একে অপরের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতাম, তখন মনে এক অন্যরকম আনন্দ কাজ করত। এই ভয়, আনন্দ আর শেখার তৃপ্তি – এই সবগুলো অনুভূতি মিলিয়েই আমার এই যাত্রাটা ছিল এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা।
সামনের পথ: আরও শেখার আকাঙ্ক্ষা
এই সার্টিফিকেশন অর্জন করাটা আমার জন্য শুধু একটা মাইলফলক নয়, বরং এটা আমার শেখার যাত্রার একটা নতুন শুরু। আমি মনে করি না যে আমি সব শিখে ফেলেছি। বরং, এই কোর্সটা আমার মধ্যে আরও নতুন কিছু শেখার আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে। এখন আমার মনে হয়, শেখার কোনো শেষ নেই। প্রতিদিন নতুন নতুন বিষয় আসছে, নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে, আর আমাকেও তার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমি এখন আরও বেশি করে অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার করি, বিভিন্ন ব্লগ পড়ি এবং নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করি। আমার লক্ষ্য হলো, শুধু নিজেকে নয়, আমার আশেপাশের মানুষকেও শেখার এই পথে অনুপ্রাণিত করা। আমি বিশ্বাস করি, জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার মধ্যেই প্রকৃত আনন্দ। তাই সামনের দিনগুলোতে আমি আরও বেশি করে শেখার চেষ্টা করব এবং আমার এই জ্ঞান অন্যদের সাথে ভাগ করে নেব।
যারা এই পথে হাঁটতে চান: কিছু জরুরি পরামর্শ
যদি আপনিও আমার মতো ‘স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক’ হওয়ার পথে হাঁটতে চান, অথবা নিজের শেখার প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করতে চান, তাহলে আমার কিছু পরামর্শ আপনার কাজে আসতে পারে। এই পথটা হয়তো সহজ নয়, কিন্তু এটা ভীষণ ফলপ্রসূ। আমি যখন এই পথে হাঁটতে শুরু করেছিলাম, তখন যদি কেউ আমাকে কিছু জরুরি টিপস দিত, তাহলে আমার যাত্রাটা হয়তো আরও মসৃণ হতো। তাই, আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি আপনাদের কিছু কথা বলতে চাই, যা আপনাদের এই যাত্রায় সাহায্য করবে বলে আমার বিশ্বাস। মনে রাখবেন, শেখাটা একটা ব্যক্তিগত যাত্রা, এবং প্রত্যেকের যাত্রা ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু কিছু মৌলিক নীতি আছে, যা সবার জন্য প্রযোজ্য।
শুরু করার আগে কিছু ভাবনা
প্রথমত, নিজের আগ্রহটা খুঁজে বের করুন। আপনি আসলে কী শিখতে ভালোবাসেন? কোন বিষয়গুলো আপনাকে অনুপ্রাণিত করে? যখন আপনি নিজের আগ্রহ অনুযায়ী কিছু শিখতে শুরু করবেন, তখন আপনার শেখার প্রক্রিয়াটা অনেক সহজ এবং আনন্দদায়ক হবে। দ্বিতীয়ত, নিজের শেখার ধরণটা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি কি দেখে শিখতে ভালোবাসেন, শুনে শিখতে ভালোবাসেন, নাকি হাতে-কলমে কাজ করে শিখতে ভালোবাসেন?
যখন আপনি নিজের শেখার ধরণটা বুঝে যাবেন, তখন আপনি আপনার জন্য সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতিটা খুঁজে বের করতে পারবেন। তৃতীয়ত, একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। আপনি কী অর্জন করতে চান?
আপনার লক্ষ্য যত পরিষ্কার হবে, আপনার পথচলা তত সহজ হবে। মনে রাখবেন, বড় লক্ষ্যকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিলে তা অর্জন করা সহজ হয়। আর চতুর্থত, ধৈর্য ধরুন। শেখাটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া, এবং রাতারাতি সবকিছু শিখে ফেলা সম্ভব নয়। মাঝে মাঝে হয়তো ব্যর্থতা আসবে, কিন্তু হাল ছেড়ে দেবেন না।
আমার দেওয়া কিছু ‘টিপস অ্যান্ড ট্রিকস’
আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু ‘টিপস অ্যান্ড ট্রিকস’ দিতে চাই, যা আপনাদের স্ব-নির্দেশিত শেখার যাত্রায় সাহায্য করবে। প্রথমত, একটি শেখার রুটিন তৈরি করুন এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে অল্প কিছুক্ষণ হলেও পড়ুন বা শিখুন। ধারাবাহিকতা খুব জরুরি। দ্বিতীয়ত, অনলাইন রিসোর্সগুলো ব্যবহার করুন। ইউটিউব, কোর্সেরা, ইউডেমি – এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে হাজার হাজার ফ্রি এবং পেইড কোর্স আছে, যা থেকে আপনি যেকোনো দক্ষতা শিখতে পারেন। তৃতীয়ত, সক্রিয়ভাবে শিখুন। শুধু বই পড়ে যাওয়া বা ভিডিও দেখা নয়, বরং শেখা বিষয়গুলো হাতে-কলমে অনুশীলন করুন, অন্যদের সাথে আলোচনা করুন, এবং প্রয়োজনে সেগুলো শেখানোর চেষ্টা করুন। যখন আপনি কাউকে কিছু শেখানোর চেষ্টা করবেন, তখন আপনার নিজের জ্ঞান আরও পরিষ্কার হবে। চতুর্থত, নিজের অগ্রগতি ট্র্যাক করুন। আপনি কী শিখছেন, কতটুকু শিখছেন, এবং আপনার লক্ষ্য অর্জনে কতটুকু এগিয়েছেন – এই সবকিছু রেকর্ড করে রাখুন। এটি আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে। আর পরিশেষে, নিজের প্রতি সদয় হন। ভুল করাটা শেখার প্রক্রিয়ারই একটা অংশ। ভুল থেকে শিখুন এবং এগিয়ে যান।
글을 마치며
বন্ধুরা, ‘স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক’ হিসেবে আমার এই যাত্রাটা শুধু একটা সার্টিফিকেট অর্জনের গল্প নয়, বরং এটা নিজের ভেতরের এক নতুন দিগন্ত আবিষ্কারের কাহিনী। আমি বিশ্বাস করি, শেখার আনন্দ যখন আত্মবিশ্বাসের সাথে মিশে যায়, তখন জীবনটাই অন্যরকম হয়ে ওঠে। এই পথচলা আমাকে শিখিয়েছে যে, জ্ঞানকে শুধু নিজের মধ্যে আটকে না রেখে, সবার সাথে ভাগ করে নেওয়াই জীবনের সবচেয়ে বড় সার্থকতা। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ যে, আপনাদের সাথে আমার এই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পেরেছি। আশা করি, আমার এই গল্প আপনাদেরও নতুন কিছু শিখতে অনুপ্রাণিত করবে।
알아두면 쓸모 있는 정보
১. নিজের শেখার ধরণ (Learning Style) আবিষ্কার করুন: আপনি কীভাবে সবচেয়ে ভালো শিখতে পারেন, তা জানলে শেখাটা সহজ হবে।
২. ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন: বড় লক্ষ্যকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করে নিলে অর্জন করা অনেক সহজ হয়।
৩. অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার করুন: Coursera, Udemy, YouTube-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে প্রচুর মানসম্মত কোর্স ও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়।
৪. সক্রিয়ভাবে শিখুন: শুধু তথ্য গ্রহণ না করে, হাতে-কলমে অনুশীলন করুন, অন্যদের সাথে আলোচনা করুন এবং শেখানোর চেষ্টা করুন।
৫. ধৈর্য ধরুন এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন: শেখা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, প্রতিদিন অল্প অল্প করে শিখলেও দীর্ঘমেয়াদে বড় পরিবর্তন আসে।
중요 사항 정리
এই পুরো আলোচনা থেকে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিখতে পারি। প্রথমত, বর্তমান দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা একটি অপরিহার্য দক্ষতা। এটি আমাদের শুধুমাত্র নতুন জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে না, বরং কর্মজীবনে প্রাসঙ্গিক থাকতে এবং ব্যক্তিগতভাবে বিকশিত হতেও সহায়তা করে। দ্বিতীয়ত, নিজের শেখার ধরণ বোঝা এবং সেই অনুযায়ী কৌশল অবলম্বন করা শেখার প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর ও আনন্দদায়ক করে তোলে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, যখন আমরা নিজেদের শেখার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেই, তখন আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বেড়ে যায় এবং যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠি। তৃতীয়ত, শেখাটা শুধুমাত্র নিজের জন্য নয়, বরং এই জ্ঞান অন্যদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই প্রকৃত তৃপ্তি। একজন ‘স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক’ হিসেবে আমি অনেককে তাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করতে পেরেছি, যা আমার জীবনে এক অসাধারণ আনন্দ এনেছে। চতুর্থত, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং অনলাইন রিসোর্সগুলো আমাদের দক্ষতা অর্জনের নতুন নতুন পথ খুলে দিয়েছে, যা এখনকার যুগে অনস্বীকার্য। সবশেষে, মনে রাখবেন শেখার কোনো শেষ নেই; এটি একটি চলমান যাত্রা, যেখানে ভয়, আনন্দ এবং তৃপ্তি একে অপরের পরিপূরক।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: “স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক” (Self-Directed Learning Coach) সার্টিফিকেশন আসলে কী এবং এর মাধ্যমে কী শেখানো হয়?
উ: এই প্রশ্নটা প্রায় সবার মনেই আসে, এবং আমি নিজেও যখন প্রথম এর সম্পর্কে জানতে শুরু করেছিলাম, আমার মধ্যেও একই কৌতূহল ছিল। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক এমন একজন ব্যক্তি যিনি অন্যদের শেখার প্রক্রিয়াকে তাদের নিজেদের মতো করে পরিচালনা করতে শেখান। অর্থাৎ, কীভাবে নিজের শেখার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হয়, সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় উপকরণ খুঁজে বের করতে হয়, শেখার কৌশল তৈরি করতে হয় এবং নিজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে হয়, এই সব বিষয়ে একজন প্রশিক্ষক সাহায্য করেন। এই সার্টিফিকেশন কোর্সে এমন সব দক্ষতা শেখানো হয় যা একজন মানুষকে কেবল জ্ঞান অর্জনের পথেই নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে ও সমস্যা সমাধানে স্বাবলম্বী করে তোলে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এটা শুধু কিছু তত্ত্ব শেখানো নয়, বরং নিজের ভেতরের শেখার আগ্রহটাকে জাগিয়ে তোলা এবং তাকে সঠিক পথে চালিত করার এক দারুণ প্রক্রিয়া। শেখার প্রতি প্রত্যেকের নিজস্ব একটা স্টাইল থাকে, আর এই সার্টিফিকেশন আমাকে সেই স্টাইলগুলোকে চিনতে এবং সেগুলোকে আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে শিখিয়েছে।
প্র: আপনি কেন এই “স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা প্রশিক্ষক” সার্টিফিকেশনটি অর্জন করার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং আপনার জীবনে এর প্রভাব কেমন পড়েছে?
উ: সত্যি বলতে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে আমার নিজের শেখার প্রতি অদম্য আগ্রহটাই ছিল মূল কারণ। আপনারা তো জানেনই, আমি সব সময় নতুন কিছু শিখতে ভালোবাসি। আমি অনুভব করেছিলাম যে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা অনেক সময় আমাদের নিজস্ব গতি এবং আগ্রহকে দমিয়ে রাখে। তাই আমি এমন একটি পদ্ধতি খুঁজছিলাম যেখানে আমি নিজেই আমার শেখার লাগাম ধরতে পারি। এই সার্টিফিকেশন আমাকে সেই সুযোগটা করে দিয়েছে। আমার জীবন এর ফলে অনেক বদলে গেছে। এখন আমি যেকোনো নতুন বিষয় শিখতে আর দ্বিধা করি না, বরং একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে সেটিকে শেখার চেষ্টা করি। এই প্রক্রিয়ায় আমি শুধু নতুন তথ্য সংগ্রহ করি না, বরং সেগুলোকে আমার ব্যক্তিগত জীবনে এবং পেশাগত ক্ষেত্রে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটাও শিখি। যেমন, আমার ব্লগের বিষয়বস্তু নির্বাচন থেকে শুরু করে সেগুলোকে কীভাবে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, এই পুরো প্রক্রিয়াতেই স্ব-নির্দেশিত শিক্ষার কৌশলগুলো আমাকে দারুণ সাহায্য করেছে। নিজের উপর বিশ্বাস বেড়েছে, আর মনে হয়েছে, “আরে, আমিও পারি!” সবচেয়ে বড় কথা, এই অভিজ্ঞতা আমাকে শুধু নিজের উন্নতিতেই সাহায্য করেনি, বরং অন্যদেরও তাদের শেখার পথে সাহায্য করার অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
প্র: সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে, কীভাবে স্ব-নির্দেশিত শিক্ষার ধারণা থেকে উপকৃত হতে পারে এবং এটি শুরু করার জন্য তাদের কী করা উচিত?
উ: আমাদের দেশে স্ব-নির্দেশিত শিক্ষার ধারণাটা এখনো ততটা প্রচলিত না হলেও, এর সম্ভাবনা বিশাল। ভাবুন তো, কত মানুষ আছেন যারা নতুন কিছু শিখতে চান কিন্তু সময় বা সুযোগের অভাবে পারেন না। স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা তাদের জন্য একটা দুর্দান্ত পথ হতে পারে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আপনি আপনার নিজস্ব গতিতে, আপনার পছন্দমতো সময়ে এবং আপনার পছন্দসই বিষয় শিখতে পারবেন। যেমন, কোনো নতুন ভাষা শেখা, কোডিং শেখা, গ্রাফিক ডিজাইন বা কন্টেন্ট রাইটিং-এর মতো দক্ষতা অর্জন করা, যা আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং বা নতুন আয়ের উৎস খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।এটি শুরু করার জন্য কিছু সহজ ধাপ অনুসরণ করতে পারেন:
1.
আপনার আগ্রহের ক্ষেত্র খুঁজে বের করুন: প্রথমে ভাবুন, কোন বিষয়টা আপনাকে সবচেয়ে বেশি টানে? যে বিষয় আপনাকে কৌতূহলী করে, সেটিই শিখতে চেষ্টা করুন।
2. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন: আপনি কী শিখতে চান এবং কতটুকু শিখলে আপনি সন্তুষ্ট হবেন, তা নির্দিষ্ট করুন। যেমন, প্রথম ২০ ঘণ্টায় একটি নির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জন।
3.
ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন: পুরো শেখার প্রক্রিয়াটাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিন। এতে শেখাটা সহজ মনে হবে এবং হতাশ হবেন না।
4. প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করুন: বই, অনলাইন কোর্স, টিউটোরিয়াল বা অ্যাপ—যেটা আপনার জন্য কার্যকর, তা সংগ্রহ করুন।
5.
নিয়মিত অনুশীলন করুন: অনুশীলনই নিখুঁত করে তোলে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় বের করে অনুশীলন করুন।
6. নিজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করুন: নিয়মিত দেখুন আপনি কতটা শিখছেন এবং কোথায় উন্নতি করা দরকার।ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে, আমি যখনই নতুন কিছু শিখি, তখনই মনে হয় জীবনটা আরও রঙিন আর অর্থপূর্ণ হয়ে উঠছে। আমাদের দেশেও যদি এই স্ব-নির্দেশিত শিক্ষার চল বাড়ে, তাহলে অনেক তরুণ-তরুণী নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পথ খুঁজে পাবে বলে আমার বিশ্বাস। নিজের ভুল থেকে শেখার চেষ্টা করুন, কারণ কখনই হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়।






